আপনার কি হাঁপানি আছে? কী করে বুঝবেন জেনে নিন
বিশেষজ্ঞদের মতে, হাঁপানি হল ডায়বিটিস বা হাই ব্লাডপ্রেশারের মতো একটি অসুখ, যা সম্পূর্ণ রূপে নিরাময় করা সম্ভব নয়। কিন্তু সতর্কতা অবলম্বন করে চললে আর সঠিক চিকিৎসায় এই রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
আপনার কি স্বাভাবিক ভাবে নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে? অল্পতেই ঠান্ডা লেগে কাশি বা বুকের মধ্যে সাঁই সাঁই করে শব্দ হয়? রাত বাড়লে কি সমস্যাও বেড়ে যায়? সাবধান... এগুলি অ্যাজমা বা হাঁপানির প্রধান উপসর্গ! চিকিত্সকদের মতে, এই রোগ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বংশগত। তবে ইদানীংকালের মাত্রাতিরিক্ত দূষণের ফলে অনেকের মধ্যেই বাড়ছে হাঁপানির সমস্যা।
আমাদের ফুসফুসে অক্সিজেন বহনকারী সরু সরু অজস্র নালী পথ রয়েছে। ধুলো, অ্যালার্জি বা অন্যান্য নানা কারণে শ্বাসনালীর পেশি ফুলে ওঠে এবং অক্সিজেন বহনকারী নালী পথ সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। ফলে আমাদের শরীর প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না। আর এর থেকেই নিঃশ্বাসের কষ্ট-সহ নানা শারীরিক সমস্যা শুরু হয়।
আরও পড়ুন: মুখের ক্যানসার বুঝিয়ে দেবে এই উপসর্গগুলি
ঠিক কী কী কারণে হাঁপানি হয়?
• অ্যালার্জি এই অসুখের এক অন্যতম কারণ। ধুলো, ধোঁয়া, তুলোর আঁশ, পশুপাখির লোম, রান্নাঘর ও বিছানার ধুলো, বাতাসে ভেসে থাকা ফুলের রেণু ইত্যাদি শ্বাসনালীর সমস্যা সৃষ্টি করে। এগুলি ‘অ্যাজমা অ্যাটাক’-এর ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়াও রাসায়ানিকের উগ্র গন্ধ, গ্যাস হাঁপানির সমস্যা বাড়িয়ে দেয়।
• কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অ্যাজমার অ্যাটাক হতে পারে।
• ধূমপান এই রোগের ঝুঁকি অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। ধূমপান প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ— তা হাঁপানির সমস্যা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। সন্তানসম্ভবা কোনও মহিলা ধূমপান করলে তাঁর গর্ভজাত শিশুর হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
আরও পড়ুন: আপনিও কি এই ভাবে বসেন? সাবধান...হতে পারে মারাত্মক বিপদ!
• ঋতুপরিবর্তনের সময় জ্বর, সর্দি-কাশি হাঁপানির প্রবণতা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
• পরিবারে কারও হাঁপানির সমস্যা থাকলে এই অসুখের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।
• অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও অবসাদ হাঁপানির সমস্যা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
• অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড ও জাঙ্ক ফুড খাওয়া, কনকনে ঠান্ডা জল বা ঠান্ডা পানীয় খাবার অভ্যাস হাঁপানির সমস্যা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করলে হতে পারে এই মারাত্মক অসুখ!
বিশেষজ্ঞদের মতে, হাঁপানি হল ডায়বিটিস বা হাই ব্লাডপ্রেশারের মতো একটি অসুখ, যা সম্পূর্ণ রূপে নিরাময় করা সম্ভব নয়। কিন্তু সতর্কতা অবলম্বন করে চললে আর সঠিক চিকিৎসায় এই রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই উপরে উল্লেখিত উপসর্গগুলি নিজের বা পরিবারের কারও মধ্যে লক্ষ্য করলে দেরি না করে চিকিত্সকের পরামর্শ নিন। চিকিত্সকের পরামর্শ মতো নিয়ম মেনে চলতে পারলে হাঁপানি বা অ্যাজমাকে দূরে সরিয়ে রেখে সুস্থ ভাবে জীবনযাপন সম্ভব।