আঘাত মাথায় না চোখে? হাতির পায়ে পিষ্ট রোগীকে নিয়ে চলছে 'হাত ঝাড়ার' পালা
কূল-কিনারা পাচ্ছেন না রোগীর পরিবার। ঠিক কী হয়েছিল? জানা গিয়েছে, ক্ষেত মজুরের কাজ করেন বছর ৪৪-এর সোনা বালা রাই।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মাথার ক্ষত থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে গিয়েছে গোটা মাথায়, যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন রোগী অথচ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে তরুণীকে রেফার করা হল কলকাতা মেডিক্যালের চোখের বিভাগে। আর তাতেই কার্যত বিনা চিকিৎসায় কাতরাচ্ছেন রোগী। কূল-কিনারা পাচ্ছেন না রোগীর পরিবার। ঠিক কী হয়েছিল? জানা গিয়েছে, c মালবাজারে ক্ষেত মজুরের কাজ করেন বছর ৪৪-এর সোনা বালা রাই।
আরও পড়ুন: টিভি দেখে ক্রাইম থ্রিলার নকল, 'খেলতে খেলতে' বেঘোরে মৃত্যু খুদের
গত সপ্তাহে হাতির আক্রমণে মাথায় গুরুতর চোট পান তিনি। চিকিৎসকরা জানান, মাথার বাঁদিকে চোয়াল থেকে মাথার পিছনের অংশ ছাল-চামড়া ছবি উঠে গিয়েছিল। চোয়াল, কানের হাড় ভেঙেছে। কানের পাশে গভীর ক্ষত, মাথার ভিতরে ও পিছনেও ক্ষত রয়েছে। সোনার প্রতিবেশী হরিপদ রায় বলেন, "সোনা বালা খুব গরিব। ক্ষেত মজুরের কাজ করেন তিনি। জঙ্গলে হাতির আক্রমণের মুখে পড়ে সোনা। সুরে করে আছড়ে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে তাকে টিপে ধরে হাতিটি, আর তাতেই গুরুতর জখম হয় সোনা।"
তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। সমস্যা শুরু হয় এরপরেই। পরিবারের অভিযোগ, মাথায় মূল আঘাত সত্বেও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ গুরুতর আঘাত, মাথার ক্ষত কিছু না দেখেই সেলাই করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের রিজিওনাল ইনস্টিউট অফ ওপথালমলজিতে পাঠিয়ে দেয়। বলা হয় ওখানেই চোখের পরবর্তী চিকিৎসা হবে। এরপর সোমবার কলকাতা মেডিক্যালে চোখের বিভাগে ভর্তি করানো হয় সোনাকে। রোগীর পরিবারের দাবি, "চিকিৎসকরা বলছেন, চোখের অস্ত্রোপচার করলে সংক্রমণ মস্তিষ্কে ছড়িয়ে যাবে, আগে মাথার চিকিৎসা করে তারপরই তাঁরা চোখের পরীক্ষা করে চিকিৎসা শুরু করবেন। কাজেই এখানেই টানা ৪ দিন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে রোগী। আমরা খুব অসহায় বোধ করছি।"
আরও পড়ুন: সাত দফা দাবিতে ধর্মঘটে WBTC-র অস্থায়ী কর্মীরা, ব্যাহত পরিষেবা
সবমিলিয়ে চোখের চিকিৎসা এখন দূরস্ত, মাথার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন সোনা বালা। সংক্রমণ ছড়িয়েছে মাথায়। তবে চোখের বিভাগে পড়ে থাকার কারণে কোনও চিকিৎসা হচ্ছে না। প্রায় বিনা চিকিৎসায় মাথার সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে। গন্ধ বেরোচ্ছে। পচন ছড়িয়ে পড়ছে মাথার মধ্যে। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথালমলজির অধিকর্তা অসীম ঘোষ। তিনি চেষ্টা করছেন কীভাবে রোগীকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া যায়। জানিয়েছেন, "আমরা রোগীকে ফিরিয়ে দিইনি। ওর চিকিৎসার জন্য অন্য বিভাগে আমরা পাঠাচ্ছি, যোগাযোগ করছি।"