সারদা মামলার নথি পেতে নাজেহাল সিবিআই, সাহায্য করছে না রাজ্য, দিল্লিতে অভিযোগ
সারদা মামলার নথি হাতে পেতে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের।তদন্তকারীদের অভিযোগ, দফায় দফায় রাজ্যের কাছে আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি। এখন পর্যন্ত প্রায় চারশোটি মামলার মধ্যে মাত্র বারোটি মামলার নথি হাতে পেয়েছে সিবিআই। নয়ই মে, সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
সারদা মামলার নথি হাতে পেতে রীতিমতো নাজেহাল অবস্থা সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের।তদন্তকারীদের অভিযোগ, দফায় দফায় রাজ্যের কাছে আর্জি জানিয়েও লাভ হয়নি। এখন পর্যন্ত প্রায় চারশোটি মামলার মধ্যে মাত্র বারোটি মামলার নথি হাতে পেয়েছে সিবিআই। নয়ই মে, সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
১২ মে, সারদা তদন্তে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করে সিবিআই। সিবিআইয়ের তরফে নথি হস্তান্তরের আর্জি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয় রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রকে।
১৯ মে, বিধাননগর পুলিসের কমিশনার ও সারদা তদন্তে রাজ্য সরকারের গঠিত সিটের অন্যতম সদস্য রাজীব কুমারের সঙ্গে দেখা করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। তাঁর কাছে নথি হস্তান্তরের দাবি জানানো হয় সিবিআইয়ের তরফে।
২০ মে, রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র ও ডিজি জিএমপি রেড্ডির সঙ্গে দেখা করেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। তাঁদেরও মামলার নথি দ্রুত হস্তান্তরের জন্য আর্জি জানানো হয়।
২১ মে, রাজ্যের বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্য, এডিজি সিআইডির সঙ্গেও ভবানী ভবনে দেখা করেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা।
কিন্তু এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে সারদা সংক্রান্ত তিনশো পঁচাশিটি মামলার মধ্যে মাত্র বারোটি মামলার নথি হাতে পেয়েছে সিবিআই। সিবিআইয়ের দাবি, এই বারোটি মামলার একটিও তেমনভাবে গুরুত্বপূর্ণ নয়।
তবে সিবিআই-ই প্রথম নয়। সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে শুরু করে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিরিয়ান ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও একই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হয়।
গত বছর সুদীপ্ত সেনের গ্রেফতারের পরপরই সারদা তদন্তে বিধাননগর পুলিসের কাছে নথিপত্র চেয়েও পায়নি ইডি। আদালতের দ্বারস্থ হতে হয় ইডিকে।
কিছুদিন আগেও পিয়ালি সেনের লকার বাজেয়াপ্ত করতে গিয়েও বিধাননগর পুলিসের বাধার মুখোমুখি হয় ইডির তদন্তকারীরা।
জেলে সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে ইডি বেআইনিভাবে নথি সই করিয়েছে বলে অভিযোগ রাজ্য কারা দফতরের।
নথি সই করাতে ইডির তদন্তকারী হুমকি দিয়েছিল বলে আলিপুর থানায় অভিযোগ করেন সুদীপ্ত সেন। অভিযোগ রাজ্যের চাপেই সারদা কর্তা এই অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সিবিআই সূত্রে খবর, রাজ্যের তরফে যে অসহযোগিতা হবে তা তাঁরা আঁচ করেছিলেন কলকাতায় পৌছে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তকারীদের সঙ্গে কথা বলার পর এ বিষয়ে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যান গোয়েন্দারা। সে জন্যই তাঁরা রাজ্য সরকারের সর্বস্তরে কথা বলে সহযোগিতা পাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি বলে দাবি সিবিআইয়ের।
নবান্ন সূত্রে খবর, গত পাঁচ মাস ধরে সিট কার্যত নিষ্ক্রীয়। বিশেষ করে সিআইডির দুই অফিসার শিবাজী ঘোষ ও বিনীত গোয়েলের বদলির পর কার্যত সিটের কাজকর্ম দেখার কেউ নেই। সারদা সংক্রান্ত ৩৮৫টি মামলার মধ্যে ২৭৭টিরই চার্জশিট হয়ে গিয়েছে। তার নথিপত্র কোথায় আছে, তার হদিশ নেই সিটের কাছে। তাই নথিপত্র হস্তান্তরের পদ্ধতিতে বিলম্ব হচ্ছে।
তবে নথি হাতে না পাওয়ায় সিবিআই এখনও সারদা কাণ্ডে মামলা শুরু করতে পারছে না। বিলম্বিত হচ্ছে গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া। উপায় খুঁজতে গোটা বিষয়টি দিল্লির সদর দফতরে জানিয়েছে সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা।