ভারতে প্রতিদিন ৭০০ কেজি সোনা ঢোকে চোরাপথে
ফের সোনা উদ্ধার হল দমদম বিমানবন্দরে। আজ সকালে দক্ষিণ ভারতের তিন বাসিন্দার কাছ থেকে ৬ কেজি সোনা উদ্ধার করেন শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা। অন্যদিকে হাওড়া স্টেশনে ১৮টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করল আরপিএফ। গত কাল রাতে বিভূতি এক্সপ্রেস থেকে দুই ব্যক্তিকে আটক করে আরপিএফ। উদ্ধার হয় দুবাইতে তৈরি ওই সোনার বিস্কুট গুলি, যার মোট ওজন ২ কেজির বেশি।
ফের সোনা উদ্ধার হল দমদম বিমানবন্দরে। আজ সকালে দক্ষিণ ভারতের তিন বাসিন্দার কাছ থেকে ৬ কেজি সোনা উদ্ধার করেন শুল্ক দফতরের আধিকারিকরা। অন্যদিকে হাওড়া স্টেশনে ১৮টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করল আরপিএফ। গত কাল রাতে বিভূতি এক্সপ্রেস থেকে দুই ব্যক্তিকে আটক করে আরপিএফ। উদ্ধার হয় দুবাইতে তৈরি ওই সোনার বিস্কুট গুলি, যার মোট ওজন ২ কেজির বেশি।
বিদেশ থেকে চোরা পথে সোনা এনে মুম্বইয়ের অপরাধ জগতের বাদশা হয়েছিল হাজি মস্তান। ভারতে মোস্ট ওয়ান্টেড দাউদ ইব্রাহিমের হাতে খড়িও সোনা পাচার থেকেই। সম্প্রতি ভারতেও চোরাপথে সোনা আনার প্রবণতা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় শুল্ক দফতর ও অর্থনিতিক গোয়ন্দা দফতরের হিসেব অনুযায়ী গত এক বছরকে চোরা পথে সোনা আনার প্রবণতা বেড়েছে প্রায় ৩০০ শতাংশ।
তাদের মতে প্রতিদিন ভারতে ৭০০ কেজি সোনা চোরাপথে ঢোকে বিভিন্ন সংগঠিত পাচার বাহিনীর হাত দিয়ে। এরই মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ কমাতে সোনা আমদানিতে শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। এর জেরে ২০১৩ সালে সোনা আমদানি ১ লক্ষ ৬২ হাজার কেজি থেকে একলাফে কমে দাঁড়ায় ১৯ হাজার ৩০০ কেজিতে। আর এর জেরেই ভারতের পাশাপাশি এই রাজ্যে সক্রিয় হয়েছে সোনা পাচার চক্র। পরিসংখ্যান বলছে গত কয়েকমাসে রাজ্যে সোনা উদ্ধার হয়েছে বেশ কয়েকবার।
১০.১১.২০১৩- বহরমপুরে একটি গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১৯ কোটি টাকা মূল্যের ৫৮ কেজি সোনা।
০৭.০১.২০১৪-দমদম বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার হয় ৮০০ গ্রাম সোনা। ব্যাঙ্কক থেকে আনা হচ্ছিল সোনা।
০৮.০১.২০১৪- দমদম বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার করা হয় ৪ কেজি ২০০ গ্রাম সোনা।
০৯.০১.২০১৪-দমদম বিমানবন্দর থেকে ৬০৮ গ্রাম সোনা উদ্ধার হয়। গ্রেফতার করা হয় চারজনকে।
০১.০৩.২০১৪-উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপ নগরে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় দেড় কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৪ কেজি সোনা।
০৯.০৩.২০১৪-বসিরহাটে তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ৪৫ কেজি সোনা।
গোয়েন্দাদের মতে, স্বল্প সময়ে বেশি আর্থ লাভের আশায় সোনা পাচার চক্রে প্রায় প্রতিদিনই যোগ দিচ্ছেন নতুন নতুন মানুষ। ৭০ বা আশ্র দশকের মতো বর্তমানেও সোনা পাচার চক্রের সঙ্গেও একশ্রেণির রাজনৈতিক নেতাদের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। শুল্ক দফতরের সন্দেহ, এই চোরাই সোনা থেকে পাওয়া বিপুল অর্থের একটা বড় অংশ খরচ হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলির নির্বাচনী প্রচারে।
দিন যত এগিয়েছে ততই বেড়েছে ভারতে চোরা পথে সোনা আমদানির পরিমাণও। পরিসংখ্যান বলছে,
২০১০-১১সালে সমগ্র ভারতে সোনা পাচারের কেস রেজিস্ট্রার হয়েছিল ১২১টি। উদ্ধার হয়েছিল ১৭.০২ কোটি টাকার সোনা।
২০১১-১২ সালে ৫০৪ টি কেস রেজিস্ট্রার হয়। উদ্ধার হয় ৪২.০৩ কোটি টাকার সোনা।
২০১২-১৩ সালে রেজিস্ট্রার হয় ৮৮৫ টি কেস। উদ্ধার হয় ১০৭.০৫ কোটি টাকার সোনা।
২০১৩-র ডিসেম্বর পর্যন্ত রেজিস্ট্রার হয়েছে ৭০০ টি কেস। এখনও পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ২৫০ কোটি টাকার সোনা।
বর্তমান চোরা সোনা পাচারের পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে গোয়েন্দাদের কপালে। প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি সত্তর বা আশির দশকের মতোই ফের একবার মাথা চাড়া দিচ্ছে অপরাধ জগত?