Mamata Banerjee, Behala Accident: 'সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ' সত্ত্বেও স্কুলছাত্রের মৃত্যু! কী করে? বেহালার ঘটনায় কড়া মুখ্যমন্ত্রী
ঘাতক লরিটির চালক লাল সিগন্যাল ভেঙে দ্রুত গতিতে চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। দুর্ঘটনার বেশ খানিকক্ষণ পর ঘাতক লরি ও লরিচালককে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে আটক করে পুলিস।
সুতপা সেন: বেহালায় স্কুলছাত্রকে লরির পিষে দেওয়ার ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। মুখ্যসচিবকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর। 'সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ' প্রকল্পের পরেও কেন এই ঘটনা ঘটল? বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ নবান্নের। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরই নগরপাল বিনীত গোয়েলের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যসচিব হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদী। শুক্রবার সকালে স্কুলে আসার সময় স্কুলের সামনেই দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াকে পিষে দেয় লরি। যে ঘটনাকে ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে বেহালা চৌরাস্তা।
পুলিসের গাড়িতে ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা। এমনকি আগুন ধরিয়েও দেয়। রাস্তায় চলে অবরোধ, বিক্ষোভ। এমনকি ডায়মন্ডহারবার ট্রাফিক গার্ডেও ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। উত্তেজিত জনতাকে ক্ষান্ত করতে পুলিস কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। যা ঘিরে আরও ক্ষোভে ফেটে পড়ে উত্তেজিত জনতা। রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। দুর্ঘটনার খবর পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কানেও। মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, কী হয়েছিল? কী করে এমন ঘটনা ঘটল? ঘটনা সম্পর্কে জানতে চেয়ে মুখ্যসচিবকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনা সম্পর্কে বিশদে জানতে মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। প্রসঙ্গত, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আগেই ঘটনাস্থলে যান পুলিস কমিশনার।
এদিন স্কুলের সামনেই ছোট্ট সৌরনীলকে পিষে দিয়ে যায় দ্রুতগতিতে ধাবমান একটি লরি। এই ঘটনায় স্কুলের এক শিক্ষক কাঁদতে কাঁদতে অভিযোগ করেছেন, 'দৌড়ে ছুটে গিয়ে দেখি বাচ্চাটি স্পট ডেড। বাবাকে আমরা-ই উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে পাঠাই। মাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে এসে টিচার্স রুমে বসাই। তারমধ্যে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটাতে থাকে পুলিস! স্কুলের অন্য বাচ্চারাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বার বার পুলিসকে বলা সত্ত্বেও স্কুলের সামনে কোনও ট্রাফিক দেয়নি! সকালবেলা স্কুলে ঢোকা যায় না এমন অবস্থা থাকে!'
এদিনও ঘাতক লরিটির চালক লাল সিগন্যাল ভেঙে দ্রুত গতিতে চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। দুর্ঘটনার বেশ খানিকক্ষণ পর ঘাতক লরি ও লরিচালককে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে আটক করে পুলিস। দুর্ঘটনাস্থলের পর থেকে বিদ্যাসাগর সেতু পর্যন্ত যতগুলি সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল, সেইসব ক্যামেরায় ধরা পড়া ফুটেজে লরিটির গতিবিধি ট্র্যাক করে লরিটিকে ধরা হয়। এই ঘটনার পর ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা এড়াতে সাউথ ওয়েস্ট ট্রাফিক গার্ডের সঙ্গে বেহালা, ঠাকুরপুকুর, পর্ণশ্রী ও হরিদেবপুর থানা বৈঠকে বসবে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। অর্থাৎ ডায়মণ্ডহারবার রোড যে যে থানাগুলির আওতায় পড়ছে, তারা প্রত্যেকেই বৈঠকে বসবে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করা হবে বলে পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
ঘাতক লরিটি সৌরনীলের বাবা সরোজ কুমার সরকারের পায়ের উপর দিয়েও চলে গিয়েছে। প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বিদ্যাসাগর হাসপাতালে। পরে সেখান থেকে এসএসকেএম-এ নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তিনি পিজির ট্রমাকেয়ারে ভর্তি আছেন। স্থিতিশীল আছেন। এক্সরে সহ অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে তাঁর। ওদিকে মা দীপিকা সরকার একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বার বার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। ময়নাতদন্তের জন্য বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সৌরনীলের দেহ।
আরও পড়ুন, Mamata On Nusrat: অভিযোগ প্রমাণের আগেই অভিযুক্ত? নুসরতের পাশে মমতা!