করোনায় বাবা-মা হারিয়ে দেশে অনাথ শিশুর সংখ্যা ৯,৩০০, সুপ্রিম কোর্টকে জানাল NCPCR
অভিভাবকহীন শিশুরা যাতে পাচার বা অন্যান্য অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের শিকার না হয়ে যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে, রাজ্যের সরকারকে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের কাছে দায়ের করা হলফনামায় জাতীয় শিশু অধিকার সংরক্ষণ কমিশন (National Commission for Protection of Child Rights (NCPCR) জানিয়েছে, কোভিড -১৯ এর কারণে অভিভাবকহীন হয়ে পড়া শিশুদের সুস্থতার দিকে নজরদারি চালানোর জন্য একটি স্কিমের পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, কোভিডের কারণে অনাথ শিশুদের দেখভালের দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্য সরকারকেই। সেই মর্মে শনিবার জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে দেশের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে।
হলফনামা অনুযায়ী, করোনায় বাবা মা হারিয়েছে প্রায় ৯ হাজার ৩৪৬ জন শিশু। নতুন করে তাদের নাম আপলোড করা হয়েছে Bal Swaraj পোর্টালে। যার মধ্যে বাবা-মা দুজনকেই হারিয়ে অনাথ হয়েছে ১ হাজার ৭৪২ জন। বাকি ৭ হাজার ৪৬৪ জন বাবা অথবা মাকে হারিয়েছে করোনায়।
এর মধ্যে ৯৮৫ জন পরিবারের বাকি সদস্যের সঙ্গে থাকছে। যাঁরা আইনি অভিভাবক হিসাবে এখনও মনোনীত হয়নি। অন্যদিকে ৬ হাজার ৬১২ জন বাবা অথবা মাকে হারিয়ে যেকোনও একজন অভিভাবকের সঙ্গে থাকছে। এছাড়াও, ৩১ জন শিশুকে বিশেষ দত্তক সংস্থায় পাঠানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া তথ্য অনুসারে, মধ্য প্রদেশে অনাথ শিশুর সংখ্যা সর্বাধিক। সেখানে ৩১৮ শিশু অনাথ এবং ১০৪ জনকে ফেলে রেখে যাওয়া হয়েছে। যাঁদের পরিবারের কোনও হদিশ নেই।
উত্তর প্রদেশে ১ হাজার ৮৩০ জন শিশু মা অথবা বাবাকে হারিয়ে, একজন অভিভাবকের সঙ্গে থাকছে। এরপরই রয়েছে বিহার। পেশ করা তথ্য অনুযায়ী, ৪ থেকে ৭ বছরের মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ৫১৫ জন শিশু। ৮ থেকে ১৩ বছরেরে মধ্যে রয়েছে ৩ হাজার ৭১১ জন, ও ১৪ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ৬২০ জন কিশোর-কিশোরী। ১৬ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ৭১২ জন।
প্রসঙ্গত, শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোসের বেঞ্চ জানিয়েছে, অভিভাবকহীন শিশুরা যাতে পাচার বা অন্যান্য অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের শিকার না হয়ে যায়, সেদিকে নজর দিতে হবে, রাজ্যের সরকারকে।
হলফনামায় বলা হয়েছে লেখাপড়া থেকে যাবতীয় প্রয়োজনীয় দিকে খেয়াল রাখতে হবে সরকারকে। কেউ যদি বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা করে, পরিবার যদি তাঁর বেতন দিতে না পারে তাহলে ২০০৯ এর ১২ (১) (গ) ধারা অনুযায়ী স্কুলের বেতন সরকারকে বহন করতে হবে। এই নিয়ম অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বরাদ্দ থাকবে।