সুপ্রিম রায়ে পরকীয়া আর অপরাধ নয়, ৪৯৭ ধারা অসাংবিধানিক
সভ্য সমাজে কোনও আইন ব্যক্তির মর্যাদা খর্ব করতে পারে না।
নিজস্ব প্রতিবেদন: পরকীয়া সম্পর্ক ফৌজদারি অপরাধ নয় এবং শাস্তি যোগ্য অপরাধও নয়। তবে 'পরকীয়া বা ব্যাভিচার' 'নিঃসন্দেহে' বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ হতেই পারে। দেড় শতকের পুরানো ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারাকে অসাংবিধানিক বলে বৃহস্পতিবার এই রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এদিন বলে, কোনও মহিলা তাঁর স্বামীর সম্পত্তি নয়। সভ্য সমাজে কোনও আইন ব্যক্তির মর্যাদা খর্ব করতে পারে না। প্রধান বিচারপতি রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বলেন, "কোনও পুরুষ বিবাহিত মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে, সেটাকে অপরাধ বলা যায় না"। শতাব্দী প্রাচীন 'ব্যাভিচার'-এর এই আইনকে 'খামখেয়ালী' বলেও অভিহিত করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে ১৫৮ বছর আগে তৈরি ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী, কোনও বিবাহিত মহিলা তাঁর স্বামীর অমতে অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে সেই পুরুষকে শাস্তি পেতে হত। এই আইনের মাধঅযমে স্ত্রীকে স্বামীর সম্পত্তি মনে করার মানসিকতা নিহিত ছিল বলে এদিন মন্তব্য করে আদালত। এরপরই শতাব্দী প্রাচীন এই আইনকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করা হয়। এরফলে তথাকথিত পরকীয়ার জন্য পুরুষ এবার থেকে আর আইনের চোখে অপরাধী নয়। আজকের এই রায়ের ফলে, দেশে লিঙ্গ সাম্য আরও বলিষ্ঠভাবে প্রতিষ্ঠিত হল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
কেন্দ্রীয় সরকার এই আইনকে বলবত্ রাখার পক্ষে সায় দিলেও আদালত তা গ্রহণ করেনি। কেন্দ্রের পক্ষে বলা হয়, এই আইন খারিজ করা হলে, বিবাহের পবিত্রতা ক্ষুণ্ণ হবে। কেন্দ্রের এমন দাবির মুখে আদালত জানতে চায়, স্বামীর সম্মতিতে বিবাহ বহিভূর্ত সম্পর্ক যদি শাস্তিযোগ্য না হয়, তাহলে কীভাবে বিবাহের পবিত্রতা রক্ষা পায়? এরপরই প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেন, তথাকথিত পরকীয়া বা ব্যাভিচার একটি অসুখী দাম্পত্যের কারণ নয়, ফলাফল হতে পারে।