ফিরে দেখা-কালাম
নেহাতই নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। অল্প বয়সেই সংসারের বোঝা কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। কিন্তু পড়াশোনা ছাড়েননি। পরম নিষ্ঠায় নিজেকে একটু একটু করে গড়ে তোলা সেই মানুষটিই পরবর্তীকালে হয়ে ওঠেন গোটা দেশের পথ প্রদর্শক।
ওয়েব ডেস্ক: নেহাতই নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান। অল্প বয়সেই সংসারের বোঝা কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। কিন্তু পড়াশোনা ছাড়েননি। পরম নিষ্ঠায় নিজেকে একটু একটু করে গড়ে তোলা সেই মানুষটিই পরবর্তীকালে হয়ে ওঠেন গোটা দেশের পথ প্রদর্শক।
তামিলনাড়ুর রামেশ্বরমে এপিজে আব্দুল কালামের জন্ম ১৯৩০ সালের ১৫ অক্টোবর। বাবা জৈনুলাবেদিন, মা আসিয়াম্মা। অভাবের সংসারে শৌসব আদৌ স্বাচ্ছন্দ্যো কাটেনি কালামের। সংসার চালাতে বিভিন্ন কাজ করেছেন। আবার পড়াশোনাতেও বরাবরই তিনি সেরা।তিরুচিরাপল্লীর সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পরও তৃপ্তি পাননি। পরের বছরই মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন কালাম।
এমআইটির স্নাতক কালাম দেশের অন্যতম প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-র মুখ্য বিজ্ঞানী ছিলেন। কিন্তু আরও বড় পরিসরে কাজের আগ্রহ তাঁর ছিল সীমাহীন। সেই তাগিদেই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোয় যোগ দেন। তিনিই ছিলেন ভারতের প্রথম স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল প্রোজেক্টের অধিকর্তা। সত্তরের দশকে ইসরোয় একাধিক নজরকাড়া কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়েছিলেন তিনি। তাঁরই তত্পরতায় সরকার আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচিতে সায় দেয়। অগ্নি ও পৃথ্বীর মতো মিসাইল কর্মসূচি রূপায়ণে কালামই ছিলেন মূল চালিকাশক্তি। তাঁর উদ্ভাবনী প্রযুক্তিগত দক্ষতায় ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হয়ে ওঠে আরও নিশ্ছিদ্র। পোখরানে পারমানবিক বিস্ফোরণের নেপথ্যে মূল চালিকাশক্তিও ছিলেন তিনি। এর সুবাদেই দেশজুড়ে মিসাইল ম্যান নামে পরিচিত হন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর বিজ্ঞান উপদেষ্টা ছিলেন। থেকেছেন আরও নানা সরকারি পদে। দুহাজার দুই সালে সেই মানুষটিই ধরা দিলেন সম্পূর্ণ অন্য আঙ্গিকে। সরকার ও বিরোধী দলের সমর্থন জিতে নিয়ে দেশের একাদশ রাষ্ট্রপতি হন তিনি। ভাবনা, মনন ও আচরণে তিনি ষোলোআনা জনগণের রাষ্ট্রপতি ছিলেন বলেই মনে করে বিদগ্ধ মহল। ব্যস্ততা ছিল, তবুও তাঁর মাঝেই নিরন্তর চলেছে তাঁর পড়াশোনা এবং গবেষণা।