''এই ভাষা এত মিষ্টি, বাংলা বলার লোভ সামলাতে পারলাম না", ষষ্ঠীতে বাংলা বন্দনা মোদীর
বিজেপি মানেই হিন্দিভাষী। বিজেপি মানে আর যাই হোক, বাংলা নয়। এমনই একটা বদনাম ছিল। তবে মহাষষ্ঠীর সকালে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেন সেই বদনাম ঘুঁচিয়ে দিলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন- মহাষষ্ঠীর সকালে এসে বাংলা ও বাঙালির মন জিতলেন প্রধানমন্ত্রী! বক্তৃতার একটা বড় অংশ তিনি বাংলাতেই বললেন। আর তাঁর মুখ থেকে এমন বাংলা শুনে অনেকেই অবাক।
বিজেপি মানেই হিন্দিভাষী। বিজেপি মানে আর যাই হোক, বাংলা নয়। এমনই একটা বদনাম ছিল। তবে মহাষষ্ঠীর সকালে এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেন সেই বদনাম ঘুঁচিয়ে দিলেন। তিনি মহাষষ্ঠীর সকালে যেন বাংলা ও বাঙালির একজন হয়ে উঠলেন। নিন্দুকেরা বলবেন, তিনি বাংলা সম্পর্কে হোমওয়ার্ক করে এসেছিলেন। কিন্তু যতই হোক, দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে বাংলার এবং বাঙালির দূর্গাপুজোর সঙ্গে এতটা একাত্ম হয়ে যাওয়া অবশ্যই উত্সবমুখর বাংলার কাছে নতুন পাওয়া। দুর্গাপুজোর এই শুভক্ষণে প্রধানমন্ত্রী বললেন, ''উমা এলো ঘরে। বাংলার এই সনাতন পরম্পরা রয়েছে।'' তিনি বাংলাতেই জানিয়ে দিলেন, প্রতিটি নারীকে মায়ের রুপে শ্রদ্ধা জানাতে হবে। তিনি এটাও জানিয়ে রাখলেন, নারীদের প্রতি নির্যাতন রুখতে এদেশে এখন কড়া আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। মহিলাদের সুরক্ষার জন্য এই সরকার যথেষ্ট তত্পর বলেও দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী।
বক্তৃতার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ছিল বাংলার আধিক্য। তিনি বললেন, ''বাংলা ভাষা এত মিষ্টি যে এই ভাষা বলার লোভ সামলাতে পারলাম না।। জানি আমার উচ্চারণে কিছু খামতি ছিল। তার জন্য মার্জনা করবেন।'' বাংলার পবিত্র ভূমিকে প্রণাম জানিয়ে শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বাংলায় বলেন, ''সকলকে দুর্গাপূজা এবং কালী পূজোর শুভেচ্ছা জানাই।'' বক্তৃতার শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে বাংলায় এমন কথা শুনে অবাক প্রায় অনেকেই। তবে উৎসবের আনন্দে মাতলেও প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে রাখলেন, করোনা এখনো চলে যায়নি। তাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মাস্ক পড়তে হবে। সব নিয়ম মেনেই উৎসবে মাততে হবে এবার।
আরও পড়ুন- ''মনে হচ্ছে দিল্লিতে নয়, কলকাতাতেই আছি'', ষষ্ঠীর সকালে প্রধানমন্ত্রীর বাংলা-পুজো
এরপরই তিনি জানিয়ে রাখেন, কৃষক থেকে শ্রমিক সবাইকে আত্মনির্ভর হতে হবে। তবেই গড়া যাবে সোনার বাংলা। সব শেষে প্রধানমন্ত্রী আশার কথাও শোনালেন। তিনি বললেন, এই দুর্যোগ কেটে যাবে। আশা করব আমরা বছর বছর এভাবেই দুর্গা পুজোর আনন্দে মেতে উঠব। প্রধানমন্ত্রী এদিন বাংলার স্বনামধন্য ব্যক্তিদের কথা মনে করালেন। তাঁর বক্তৃতায় ছিলেন রবীন্দ্রনাথ, শরত্চন্দ্র, রাজা রামমোহন রায়, বঙ্কিমচন্দ্র, ঋষি অরবিন্দ, মাতঙ্গিনী হাজরা। তাঁর কথায় স্মৃতিচারণ হল ক্ষুদিরাম বোস, প্রফুল্ল চাকী, বিনয়-বাদল-দীনেশের। এমনকী শিল্পের জগতে উত্তম কুমার, সত্যজিত রায়, সুচিত্রা সেনের মতো বিখ্যাত বাঙালির অবদানের কথাও স্বীকার করলেন তিনি। ষষ্ঠীর এই শুভক্ষণে বাঙালিকে যেন বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্য মনে করালেন প্রধানমন্ত্রী।