ক্রাইস্টচার্চে জঙ্গি হামলার 'ট্রমা' থেকে বেরোতে সময় লাগবে, দেশে ফিরে বললেন তামিম

আমরা চিৎকার করতে থাকি, বাস থেকে বেরোতে চাই। এরপর পার্ক দিয়ে দৌড় দিতে থাকি। মৃত্যুকে নিজের চোখে দেখে এসেছি।

Updated By: Mar 18, 2019, 03:02 PM IST
ক্রাইস্টচার্চে জঙ্গি হামলার 'ট্রমা' থেকে বেরোতে সময় লাগবে, দেশে ফিরে বললেন তামিম

নিজস্ব প্রতিবেদন : নিউ জিল্যান্ডে দুঃস্বপ্নের এক সফর শেষে শনিবার রাতেই দেশে ফিরেছে  বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দেশে ফিরে মুখ খুললেন তামিম ইকবাল। দু-তিন মিনিটেই সব কিছু পাল্টে গিয়েছে। ওই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারনা করতে গিয়ে তামিম বলেন, 'ট্রমা' থেকে বেরিয়ে আসতে একটু সময় লাগবে।
শনিবার বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর সময়ই তামিম জানান, "আমরা নিরাপদে দেশে ফিরে এসেছি এটাই বড় ব্যাপার। এখানে আমাদের পরিবারের লোকজন উদ্বিগ্ন ছিল। আমি আশা করি পরিবারের লোকজনের সঙ্গে সময় কাটালেই ওই ট্রমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারব। তবে একটু সময় লাগবে।"

ক্রিকইনফোকে এক সাক্ষাতকারে তামিম জানান, "শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চ থেকে আমাদের বাস ছাড়ার কথা ছিল দুপুর ১টা ৩০ মিনিট নাগাদ। রিয়াদ ভাই সংবাদিক সম্মেলনে গিয়েছিল। সেখানে একটু দেরি হয়ে যায়। সংবাদিক সম্মেলন শেষে তিনি ড্রেসিংরুমে ফিরে আসেন। ড্রেসিংরুমে তখন আমরা ফুটবল খেলছিলাম। তাইজুল আর মুশফিক দুজনে খেলছিল, এতেই কয়েক মিনিট দেরি হয়ে যায়। এই ছোটখাটো বিষয়গুলোই আমাদের ওই দিন বাঁচিয়ে দিয়েছে।"

আরও পড়ুন - আইরিশদের হারিয়ে প্রথম টেস্ট জয় আফগানদের

সঙ্গে তিনি বলেন, "বাসে চেপে আমরা নামাজের জন্য মসজিদের উদ্দেশে রওনা দিই। আমি সব সময় বাসের ছয় নম্বর সিটের বাঁ পাশে বসি। যখন মসজিদের কাছাকাছি পৌঁছাই, তখন আমার ডান পাশের সবাই জানালা দিয়ে কিছু একটা দেখার চেষ্টা করে। আমিও দেখলাম, মাটিতে একটা দেহ পড়ে আছে। আমরা প্রথমে মাতাল কিংবা অচেতন মনে করেছিলাম। তাই বাস এগিয়ে গিয়ে মসজিদের কাছাকাছি দাঁড়ায়। এই সময় আমরা দেখি রক্তাক্ত একটি শরীর আস্তে আস্তে পড়ে যাচ্ছে। ঠিক এই সময় ভয় পেতে শুরু করি..."

"... ভয় আমাদের আরও বাড়ল। তখন আমরা মসজিদ থেকে মাত্র ২০ গজ দূরে বাস থেকে নেমে মসজিদে ঢুকব। এমন সময় দেখি, মসজিদের চারপাশে রক্তমাখা শরীর পড়ে আছে। আমরা বুঝতে পারছিলাম না ঠিক কী করা উচিত। তখন আমরা বাসের মেঝেতে শুয়ে পড়ি। সাত-আট মিনিট ওইভাবে থাকার পর আমার পুরো শরীর ঠাণ্ডা হয়ে আসছিল। আমরা চিৎকার করতে থাকি, বাস থেকে বেরোতে চাই। এরপর পার্ক দিয়ে দৌড় দিতে থাকি। মৃত্যুকে নিজের চোখে দেখে এসেছি। এই অভিজ্ঞতা সারা জীবনে ভুলতে পারব না।"

তথ্যসূত্র : দৈনিক ইতেতফাক

.