রেইকি করে সিনেমার কায়দায় পার্টি অফিসে ঢুকে পরপর গুলি, মধ্যমগ্রাম শুটআউটকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য
এলাকা সম্পর্কেও ভালো জ্ঞান ছিল আততায়ীদের। তা না হলে অপারেশনের পর মধ্যমগ্রামের চার রাস্তায় ওত ঘিঞ্জি এলাকা দিয়ে তাদের পালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মধ্যমগ্রাম শুটআউটকাণ্ডে পুলিসের হাতে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিসের অনুমান, আততায়ীরা কেউই এলাকার নয়। ভাড়াটে গুণ্ডা দিয়েই অপারেশন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মধ্যমগ্রামের চার রাস্তার মোড়ের ওই এলাকা খুব ভালোভাবেই রেইকি করে নিয়েছিল আততায়ীরা। রেইকি করার পরই হামলা করা হয়। আততায়ীদের কারোর মুখই বাধা ছিল না। তাতে পুলিস নিশ্চিত, প্রত্যেককেই বাইরে থেকে ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়েছিল। কারণ পরিচিত হলে, বা ধরা পড়ে যাওয়ার ভয় থাকলে তারা মুখে কাপড় বেঁধে নিত। এলাকা সম্পর্কেও ভালো জ্ঞান ছিল আততায়ীদের। তা না হলে অপারেশনের পর মধ্যমগ্রামের চার রাস্তায় ওত ঘিঞ্জি এলাকা দিয়ে তাদের পালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না।
পুলিস আরও মনে করছে, আক্রান্ত তৃণমূল নেতা রিঙ্কুর ওপর বেশ কয়েকদিন ধরেই নজর রেখেছিল আততায়ীরা। তাঁর গতিবিধি নখদর্পণে ছিল। কখন কোথায় তিনি কাঁদের সঙ্গে থাকেন, তা আততায়ীরা ভালোভাবেই জানত।
চার রাস্তার মোড়ে একেবারে ঘিঞ্জি এলাকায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়। প্রতিদিনের মতো সোমবার সন্ধ্যাতেও ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের সঙ্গে সেখানে বসে কথা বলছিলেন বিনোদ সিংহ ওরফে রিঙ্কু। সেই সময় চার রাস্তার বিভিন্ন দিক থেকে আততায়ীরা আসে। মোট ৬ জন ছিল। তাদের মধ্যে দুজনের মাথায় হেলমেট ছিল। দূরে কোথাও বাইক দাঁড় করিয়েই এলাকায় ঢুকেছিল তারা। মনে করা হচ্ছে দুটি বাইকে করে এসেছিল আততায়ীরা।
পরিবার নিতে অস্বীকার করায় দেহ রয়েছে মর্গেই, নানুরে নিহত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে নোটিস লাগাল পুলিস
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, রাত ৮.২০ নাগাদ মুড়ি তেলেভাজা কিনে দলীয় কার্যালয়ের ভিতর ঢোকেন রিঙ্কু। তখনই আচমকা বোমাবাজি শুরু হয়। কার্যালয়ের বাইরে থাকা লোকজন ভয়ে পালিয়ে যায়। বোমার স্প্লিন্টারে আহত হন রিঙ্কু ঘনিষ্ঠ দীপক। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
প্রাণ বাঁচাতে কার্যালয়ের ভিতরেই লুকিয়ে থাকেন রিঙ্কু। এক দুষ্কৃতী গুলি চালাতে চালাতে ভিতরে ঢোকে। তখন বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছিল আরও একজন। রিঙ্কুকে লক্ষ্য করে পরপর দুটি গুলি করা হয়। প্রায় তিন মিনিট পর ভেতরে থাকা দুষ্কৃতী বেরিয়ে আসে। অস্ত্র উঁচিয়েই এলাকা ছেড়ে বেরিয়ে যায় তারা। সেই সময় রিঙ্কুর এক দেহরক্ষী ওস্তাদ তাদের পিছু নেয়। কিন্তু হাত ছাড়িয়ে পালিয়ে যায় ওই দুষ্কৃতী।
ঘটনায় অভিযোগের তির রাখাল নন্দী নামে এক দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে। কিন্তু ঘটনার সময়ে সে এলাকায় ছিল না। প্রোমোটারচক্রকে কেন্দ্র করেই এই হামলা বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিস।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে মধ্যমগ্রামের কদমতলা বাজার এলাকায় তৃণমূলের পার্টি অফিসে দুষ্কৃতী হামলায় গুলিবিদ্ধ তৃণমূল নেতা বিনোদ সিং। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি বর্তমানে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি।