বিজেপি জুজু? শিলিগুড়িতে একসঙ্গে মিছিলে সিপিএম-কংগ্রেস-তৃণমূল
শিলিগুড়ি শহরে প্লাস্টিক বিরোধী মিছিলে হাঁটল সিপিএম-কংগ্রেস-তৃণমূল।
মৌমিতা চক্রবর্তী
উপলক্ষ্য- পরিবেশ বাঁচানো।
অংশ নিলেন অশোক ভট্টাচার্য, গৌতম দেব ও শঙ্কর মালাকার।
শিলিগুড়ি শহরে পরিবেশ বাঁচানোর ডাক দিয়ে মিছিল করেছে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল। মিছিলে হাঁটলেন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য, তৃণমূলের মন্ত্রী গৌতম দেব ও কংগ্রেসের শঙ্কর মালাকার। আর ফাঁকতালে খোশমেজাজে গল্প করতেও দেখা গিয়েছে ত্রয়ীকে।
গৌতম দেব-অশোক ভট্টাচার্য একসঙ্গে মিছিলে হাঁটছেন? দিন কয়েক আগেও এমন ছবি ছিল কল্পনাতীত। শিলিগুড়ি পুরসভার দখল নিয়ে দুজনের 'মধুর' সম্পর্ক তো সকলেরই জানা। সেই গৌতম দেব ও অশোক ভট্টাচার্য হাঁটলেন প্লাস্টিক বিরোধী মিছিলে। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস নেতা শঙ্কর মালাকার। মিছিলের ফাঁকে গল্পও করেছেন তিন নেতা। বসেছেন একই বেঞ্চে। তৃণমূল-সিপিএম দুপক্ষই দাবি করেছে, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে পরিবেশ বাঁচাতে একজোট হয়েছেন নেতারা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, রাজনীতির সঙ্গে যোগ না থাকলে মিছিলে বিজেপির কোনও নেতা নেই কেন?
বস্তুত, লোকসভা ভোটে বিজেপির উত্থানের পর থেকে রাজ্য রাজনীতি দাঁড়িয়ে এক নতুন সন্ধিক্ষণের মুখে। বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল নেতাদের একসঙ্গে আসা তাই খুব একটা অপ্রত্যাশিত নয় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাদের মতে, বিধানসভা ভোটের আগে দেখা যেতে পারে এমন আরও অরাজনৈতিক মিছিল।
লোকসভা ভোটে রাজ্যে বামেদের পরিসর দখল করে নিয়েছে রাম। একদা ৩৪ বছরের বাম রাজ্যে এখন বিজেপির দাপাদাপি। এবার তাদের লক্ষ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যে 'সাম্প্রদায়িক শক্তি'কে ঠেকাতে বিধানসভায় একসঙ্গে মিলে কাজ করার পরামর্শ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জল্পনা শুরু হয়, তাহলে কি জোটবার্তা দিলেন তৃণমূল নেত্রী? পরের দিন পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী তাপস রায় স্পষ্ট করেন, কোনওরকম আপোষের কথা বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। অপব্যাখ্যা করেছে সংবাদমাধ্যমের একাংশ। এরপর জি ২৪ ঘণ্টার ক্যামেরার সামনে বোমা ফাটান গৌতম দেব। আলিমুদ্দিনে দাঁড়িয়ে পোড়খাওয়া সিপিএম নেতা বলেছেন, 'রাজনীতি সম্ভাবনার খেলা। এখানে কেউ অস্পৃশ্য নয়। মমতার হাত ধরার ব্যাপারে হ্যাঁ বা না কিছুই বলছি না। তবে মমতাকে এখনো অনেক কিছু করতে হবে। আমাদের শর্ত মানলে তবেই তাঁর সঙ্গে সহযোগিতা সম্ভব'।
রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছুই নেই। দীর্ঘ ৮ বছর পর জ্যোতি বসু স্মারকের জমি নিয়ে বামেদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে তৃণমূল। এমনকি জেলায় জেলায় সিপিএমের পার্টি অফিস খুলে দিতেও দ্বিধা করছেন না ঘাসফুলের নেতারা। এমন একটা প্রেক্ষাপটে পরিবেশ বাঁচানোর উদ্দেশ্যে শিলিগুড়িতে গৌতম দেব ও অশোক ভট্টাচার্যদের মিছিলের বিধেয় নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। 'বিধেয়' কি ২০২১ সালে রাজ্য রাজনীতির বিধি?
আরও পড়ুন- মমতাকে নিয়ে বিজেপির ভুয়ো সদস্যকার্ড, ব্যবস্থা নিচ্ছে তৃণমূল