মিশরে হিংসা অব্যাহত, মৃত আরও ৩
মিশরে অব্যাহত অভিশপ্ত ফুটবল দাঙ্গার রেশ। শুক্রবার মিশরে প্রাণ গেল আরও ৩ জনের। এরমধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মিশরের সুয়েজ শহরে ও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজধানী কায়রোয়। আহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে।
মিশরে অব্যাহত অভিশপ্ত ফুটবল দাঙ্গার রেশ। শুক্রবার মিশরে প্রাণ গেল আরও ৩ জনের। এরমধ্যে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে মিশরের সুয়েজ শহরে ও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে রাজধানী কায়রোয়। আহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে। সুয়েজের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মিশরের সুয়েজ শহরে পুলিসের গুলিতে মারা গিয়েছেন ২ জন। তবে কায়রোতে কী ভাবে মৃত্যু হল, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। প্রত্যদর্শীদের মতে, এদিন সকালে একদল বিক্ষুব্ধ জনতা সুয়েজের পুলিস স্টেশনে হামলা চালায়। জনতাকে সামাল দিতে গুলি চালায় পুলিস। সেখানেই পুলিসের গুলিতে মৃত্যু হয় ২ জনের।
অপরদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে কায়রোয় হাজার হাজার বিক্ষোভকারী মিছিল করে প্রথমে তাহিরির স্কোয়ারে জড়ো হয়। এরপর মিশরের সামরিক পরিষদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে তারা এগোতে থাকে দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রকের দফতরের দিকে। জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে দফতরের নিরাপত্তারক্ষীরা।
মুবারক সরকারের পতনের পর মিশরে ক্ষমতায় রয়েছে সামরিক পরিষদ `সুপ্রিম কাউন্সিল অফ দ্য আর্মড ফোর্সেস`। মুবারকের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনেও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মুখর হয় সে দেশের বহু মানুষ। তাই বিশেষজ্ঞমহলের মতে, সামরিক পরিষদের বিরুদ্ধে ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ এই দাঙ্গা পরবর্তী হিংসা। উল্লেখ্য, মুবারক শাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানও শুরু হয়েছিল শুক্রবার। সেদিনও মুবারক প্রশাসনের পুলিস এই ভাবেই বিক্ষুব্ধ জনতার উপর গুলি চালায়। রাজনৈতিক মহলের মতে, সুয়েজের ঘটনার সঙ্গে গতবছরের গণঅভ্যুত্থানের মিল রয়েছে। মিশরের একটি নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, আহত ৪০০ জনের বেশির ভাগই কাঁদানে গ্যাসে আক্রান্ত।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার পোর্ট সঈদ শহরের ফুটবল দল আল-মাসরি সঙ্গে কায়রোর দল আল আহলির ম্যাচকে ঘিরে মাঠে তুমুল সংঘর্ষ হয় দু-দলের সমর্থকদের মধ্যে। মৃত্যু হয় ৭৪ জন ফুটবল প্রেমীর। এদিনের ম্যাচে ৩-০ গোলে হেরে যায় আল-মাসরি। সফররত দলের কাছে শহরের দলের হার মেনে নিতে পারেননি মাসরি-সমর্থকরা। গ্যালারি ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন তাঁরা। এর পর শুরু হয় দাঙ্গা। আল-আহলি সমর্থকদের ওপর লোহার রড, পাথর, আতসবাজি দিয়ে হামলা চালায় আল-মাসরি সমর্থকরা। দাঙ্গা থামাতে ময়দানে নামে রায়ট পুলিশ ও সেনাবাহিনী। যদিও আল-সইদবাসীর দাবি, বিশৃঙ্খলা তৈরি করে ক্ষমতা দখলে রাখতে দাঙ্গা ছড়িয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। ৭৪ জন ফুটবল প্রেমীর মৃত্যুতে ৩ দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করে সে দেশের সরকার। ফুটবল দাঙ্গার রিপোর্ট তলব করেছে বিশ্ব ফুটবল নিয়ামক সংস্থা ফিফা।