Dhrubor Aschorjo Jibon: তার এক আশ্চর্য জীবনে রিমির টানে অপরাধ থেকে মুখ ফেরাবে ধ্রুব!..
Dhrubor Aschorjo Jibon: গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ধ্রুব নিজের প্রেমিকা রিমির পরিবারকে রক্ষা করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়। রিমিদের জন্য টাকা জোগাড় করতে গেলে তাঁকে একটা অপরাধ করতেই হবে...

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: গত ডিসেম্বরে ৩০তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বেঙ্গলি প্যানোরমা বিভাগে শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে পুরস্কারপ্রাপ্ত 'ধ্রুবর আশ্চর্য জীবন' (Dhrubor Aschorjo Jibon) আঠাশে ফেব্রুয়ারি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে। ছবিটি দেশে বিদেশে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফেস্টিভ্যালে মনোনীত এবং পুরস্কৃত হয়েছে। পরিচালক অভিজিৎ চৌধুরি আটলান্টা ইন্ডিয়ান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসাবে মনোনীত হয়েছেন এবং এই ছবি এনএবিসি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও শ্রেষ্ঠ অভিনেতার স্বীকৃতি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: Valentines Day | Salman Khan: 'ভ্যালেনটাইনস ডে, তো! আমার কিছু যায় আসে না...'
'ধ্রুবর আশ্চর্য জীবন' একটি ক্রাইম ড্রামা এবং সায়েন্স ফিকশন জঁরের চলচ্চিত্র। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ধ্রুব নিজের প্রেমিকা রিমির পরিবারকে রক্ষা করতে গিয়ে এক জটিল মুহূর্তের সম্মুখীন হয়। ধ্রুব বুঝতে পারে রিমিদের জন্য টাকা জোগাড় করতে গেলে তাঁকে একটা অপরাধ করতেই হবে। কিন্তু রিমি চায় না ধ্রুব কোনও খারাপ কাজ করুক। ধ্রুবকে দুটো রাস্তার মধ্যে যে কোনও একটা বেছে নিতে হবে। সমাজের চোখে কোনটা অপরাধ এবং কোনটা নয় - নৈতিকতার এই টানাপোড়েনে ধ্রুবর জীবন কখনো ডুবে যায়, কখনো ভেসে ওঠে।
ছবিটির চারটি অধ্যায়, ধ্রুবর জীবনের চার রকমের গল্প আছে এই চারটি অধ্যায়ে। প্রতিটি গল্প নিয়ে গড়ে ওঠে চারটি ভিন্ন জগৎ, ধ্রুবর জীবন ভিন্ন ভিন্ন রূপ নেয়। ধ্রুবর এই চারটে জীবন কীভাবে একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত? এই চারটে জীবন কি আদতে সমান্তরাল বিশ্ব? তার উত্তর মিলবে আঠাশে ফেব্রুয়ারি।
কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দর্শক, সমালোচক, জুরিদের মুখে এখনই উচ্ছ্বসিত প্রশংসা মিলেছে 'ধ্রুবর আশ্চর্য জীবন' নিয়ে এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ছবিতে মালিটভার্স এবং তাতে উন্নত এবং বুদ্ধিদীপ্ত ভি এফ এক্স এর কাজ বাংলা ছবিতে সম্ভবত প্রথম।
ছবির পরিচালক অভিজিৎ চৌধুরী জানান - ক্ষমতাবান আর ক্ষমতাশূন্যদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আমাদের মধ্যবিত্ত জীবন প্রায়শই একটা প্রশ্নের সামনে এসে দাঁড়ায় - আদর্শ আঁকড়ে থাকা না সারভাইভ করা - কোন পথে যাব? 'ধ্রুবর আশ্চর্য জীবন' ধ্রুবর জীবনের চারটি সম্ভবনার চারটি অধ্যায়ে বলা হয়েছে সেই গল্প। চারটে অধ্যায়ে চারজন কিংবদন্তি বাঙালি আর্টিস্টকে ট্রিবিউট দেওয়া হয়েছে - যামিনী রায়, গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিকাশ ভট্টাচার্য, বিনোদ বিহারী মুখার্জ্জি। এই চারজন আর্টিস্টের কাজের থিম অনুযায়ী চারটি জগৎকে ডিজাইন করা হয়েছে। আর্ট কলেজ থেকে ইউরোপিয়ান আর্টে প্রশিক্ষিত যামিনী রায়, সব ছেড়ে দেশীয় শিল্প রীতি পটচিত্র বেছে নেন। বহুমূল্যে ছবি বিক্রি করার যে প্রচলিত রাস্তা তার উল্টো পথে হেঁটে তিনি আজীবন সামান্য টাকায় ছবি বিক্রি করেছেন যাতে সাধারণ মানুষ তাঁর ছবি কিনতে পারে।
আরও পড়ুন: Ranveer Alhabadia: একের পর এক FIR, বাঁচতে 'সুপ্রিম' শরণে 'অভিশপ্ত' রণবীর...
গগনেন্রনাথ ঠাকুর ভারতবর্ষে প্রথম কিউবিজম নিয়ে কাজ করেন। গগনেন্দ্রনাথ দেশের অন্যতম অগ্রণী পলিটিক্যাল কার্টুনিস্ট ছিলেন, যিনি সাহসের সঙ্গে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ, সামাজিক ব্যবস্থা এবং বর্ণবাদকে ব্যঙ্গচিত্রে তুলে ধরেছিলেন।
বিকাশ ভট্টাচার্য, যিনি শৈশবের অন্যতম প্রিয় শিল্পী, তাঁর চিত্রকলায় ছিল অসাধারণ বহুমুখিতা। তিনি তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবনে বিভিন্ন শৈলী নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন, তবে তাঁর একটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ ডল সিরিজ যেখানে সোশ্যাল হরর বিষয়টিকে থিম হিসেবে নিয়েছেন, যেখানে সমাজের অন্ধকার দিক এবং অস্বস্তিকর বাস্তবতাগুলি ফুটে উঠেছে।
বিনোদবিহারী মুখোপাধ্যায় তাঁর মুর্যাল আর্ট এবং স্ক্রল আর্টের জন্য প্রসিদ্ধ যা মূলত ভারতের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশকে তুলে ধরেছিল। দৃষ্টিশক্তি হারিয়েও তিনি তাঁর শিল্প সৃষ্টিতে অবিচল ছিলেন। জীবনের প্রতি তাঁর গভীর অনুধাবন তাঁকে দৃষ্টিশক্তিহীন অবস্থাতেও অসাধারণ চিত্রকলা তৈরি করতে সহায়তা করেছিল। তাঁর প্রাক্তন ছাত্র চলচিত্রকার সত্যজিৎ রায় তাঁর জীবন নিয়ে 'দ্য ইনর আই' নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এই ছবিতে বিনোদবিহারী ব্যাখ্যা করেন কিভাবে একজন শিল্পী তাঁর "অন্তর্দৃষ্টি" গড়ে তোলে-একটি দৃষ্টিভিন্ন স্বতন্ত্র উপলব্ধি, যা শারীরিক দৃষ্টিশক্তির ওপর নির্ভরশীল নয়। শিল্পের এই সীমাহীন শক্তি আমাদের চলচ্চিত্রে মুল থিম হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: Aparna-Anjan: খাদের ধারের রেলিংটায় আটকে জীবন, দাম্পত্য-সখ্যের 'পরম' কথকতায় নরম আলো...
এখানে অভিনয় করেছেন ঋষভ বসু, বাদশা মৈত্র, কোরক সামন্ত, সুদীপ মুখার্জি, দেবেশ চট্টোপাধ্যায়, ঋত্বিকা পাল, যুধাজিৎ সরকার, আনন্দরূপা চক্রবর্তী, দীপক হালদার, শান্তনু নাথ, অরুণাভ খাসনোবিশ, প্রেরণা দাস, সেঁজুতি মুখোপাধ্যায়।
ঋষভ বসু বলেছেন, অভিজিৎদার সঙ্গে এটা আমার দ্বিতীয় প্রজেক্ট। প্রথমটা ছিল টুরু লাভ, লকডাউন এর সময়, হইচই -এর জন্য একটা সিরিজ। তাই বলা যায় এটা আমাদের একসঙ্গে দ্বিতীয় কাজ। অভিজিৎদার সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা সব সময়ই খুবই ভালো, কারণ অভিজিৎদার সঙ্গে আমার একটা অদ্ভুতরকমের বোঝাপড়া আছে। ঋত্তিকা পাল বলেন, এটি অভিজিৎদার সঙ্গে আমার প্রথম ছবি ছিল। প্রথম সাক্ষাৎ থেকেই তাঁর যে দিকটি আমাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করেছিল, তা হল তাঁর উদারতা। তিনি সবচেয়ে দয়ালু ও বোঝদার ব্যক্তিদের একজন, যার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। ছবিটি নিবেদন করেছেন প্রখ্যাত পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় চৌধুরী।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)