আনারসে বিস্ফোরক ভরে খাইয়েছিল মানুষ, দিনের পর দিন যন্ত্রণায় ছটফট করেছিল সেই গর্ভবতী হাতি
কেরলের পালাককাদ জেলার এই ঘটনা সারা দেশে হইচই ফেলে দিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন - বন বিভাগের অফিসার মোহন কৃষ্ণন না জানালে এমন নৃশংস কাণ্ড কোনওদিন হয়তো কেউ জানতেই পারত না। মানুষ কতটা নৃশংস হতে পারে তার আন্দাজও পাওয়া যেত না। বিনা দোষে একটি বন্য প্রাণকে এমন কষ্ট দেওয়ার কারণ কী? যাঁরা এমন জঘন্য কাজ করেছেন তাদের কাছেও কি এই প্রশ্নের উত্তর থাকবে? আনারসের মধ্যে বিষ্ফোরক ভরে খাওয়ানো হয়েছিল একটি হাতিকে। মুখের ভেতর বিষ্ফোরণ হওয়ায় জিভ জ্বলে যায় তার। মুখের ভেতর গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। দিনের পর দিন সেই ক্ষতের জ্বালা ও যন্ত্রণা নিয়ে গ্রামের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায় সেই হাতি। তারপর ধীরে ধীরে ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে।
কেরলের পালাককাদ জেলার এই ঘটনা সারা দেশে হইচই ফেলে দিয়েছে। যদিও পুলিস এই ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে কাউকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি। তবে মামলা রুজু হয়েছে। তদন্তে নেমেছে পুলিস। বোন দফতরের কর্মীরা মনে করছেন, এপ্রিল মাসের শেষে নাহলে মে মাসের শুরুতে ঘটনাটি ঘটেছিল। হাতির অটপসি রিপোর্ট হাতে পেয়েছেন বন দফতরের কর্তারা। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, হাতিটি জখম হয়েছিল অন্তত কুড়ি দিন আগে। সাইলেন্ট ভ্যালি থেকে নিকটবর্তী গ্রামে চলে এসেছিল হাতিটি। তারপরই গ্রামবাসীরা তাকে বিষ্ফোরক ভর্তি আনারস খাইয়ে দেয়। হাতিটি গর্ভবতী ছিল। মুখে ভেতর প্রচণ্ড বিস্ফোরণে হাতিটি ভয়ানক জখম হয়। যন্ত্রণা ও খিদের জ্বালায় সে বেশ কিছুদিন গ্রামের আশপাশে ঘুরতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ভেল্লিয়ার নদীতে নেমে যায়। জলে থাকলে যদি জ্বালা যন্ত্রণা কিছুটা কমে সেই আশায়। এর পর নদীতে দাঁড়ানো অবস্থাতেই মারা যায় হাতিটি। বন দফতরের অফিসার মোহন কৃষ্ণন গোটা ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছিলেন। আর তারপর থেকেই নিন্দার ঝড় উঠেছে।
আরও পড়ুন- ঘণ্টায় ১১০ কিমি! আমফানের পর বুধবারই আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় নিসর্গ, এখন অবস্থান কোথায়?
দুটি হাতির সাহায্যে ওই হাতিটির মৃতদেহ নদী থেকে তুলে আনা হয়। বন দফতরের কর্মীদের একাংশ মনে করছেন, পোড়া ক্ষতে মাছি বা অন্য কোনও পোকা যাতে ডিম পাড়তে না পারে সেই জন্য হাতিটি জলে নেমে গিয়েছিল। আবার কেউ কেউ বলছেন, মুখের প্রচণ্ড জ্বালা থেকে বাঁচতে হাতিটি জলে মুখ ও শুর ডুবিয়ে রেখেছিল। কেরলের ওই অঞ্চলে হাতি তাড়াতে বিষ্ফোরক ব্যবহার করা হয়। বিস্ফোরণের আওয়াজে হাতিরা আর ফসলের কাছাকাছি আসে না। কিন্তু এমন পৈশাচিক কাণ্ড এর আগে কখনও শোনা যায়নি।