East Medinipur: তরুণের স্বপ্ন! অবহেলায় জীর্ণ স্কুলবাড়িকে নিজের খরচে যত্নে সাজাচ্ছেন হেডমাস্টার...
East Medinipur: প্রধান শিক্ষকের বেতনের টাকায় তৈরি হচ্ছে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ। পরিকাঠামোর গেরোয় বিপাকে বিদ্যালয়।

কিরণ মান্না: পরিকাঠামোর অভাবে ধুকছে বিদ্যালয়। নেই শ্রেণিকক্ষ থেকে লেডিজ টয়লেট। ভুগছে ছাত্র-ছাত্রী থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলিতে আবেদন করেও মেলেনি সুফল। ফলে ব্যাংক থেকে ব্যক্তিগত ঋণ নিয়ে বিদ্যালয় কক্ষ গড়ছেন প্রধান শিক্ষক।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায়, বেশ কয়েক বছর ধরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ফলাফলের ভিত্তিতে একেবারে প্রথম সারিতে রয়েছে। অথচ শিক্ষায় অগ্রণী এই জেলার এক একটি বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো অত্যন্ত বেহাল। এই রকম একটি বিদ্যালয় হল ‘বহলিয়া জুনিয়র হাইস্কুল’। এগরা ১ ব্লকের এই বিদ্যালয় পরিকাঠামোর অভাবে ধুকছে। প্রথমত শ্রেণী কক্ষের খুব অভাব। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই বিদ্যালয়ের অনুমোদন রয়েছে। অথচ কাছাকাছি অন্যান্য উচ্চ বিদ্যালয় নেই। ফলে স্কুলের নবম ও দশম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা কার্যত বিনা পয়সায় এই বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন করতে আসে। অপরদিকে এক একটি শ্রেণিকক্ষে দুই তিনটি শ্রেণীর পঠন পাঠন হয়। তাতেও জায়গা কুলোয় না। ফলে বারান্দাতেও চাটাই পাতিয়ে ক্লাস বসে। এগরা পশ্চিম চক্রের এই বিদ্যালয়ে বহলিয়া, বরিশা,জুকি, মুণ্ডমারাই ও বলিহারপুর সহ প্রায় ৬টি গ্রামের প্রায় দেড়শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করে। এই বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের সংখ্যা বেশি। ইতিমধ্যে ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যালয়ের লেডিস টয়লেট। ফলে ছাত্রী থেকে শিক্ষিকা, সকলেই বিপাকে পড়েছেন।
আরও পড়ুন:Elephant Incident: উত্সবে শোকের ছায়া! শোভাযাত্রার হাতির তাণ্ডবে মন্দিরেই মৃত ৩, আহত প্রায় ৩০...
প্রধান শিক্ষককে নিয়ে এই বিদ্যালয়ে স্থায়ী টিচারের সংখ্যা মাত্র তিনজন। তবে ছাত্র-ছাত্রীদের পঠন-পাঠনে কোন সমস্যা যাতে না হয়, তার জন্য গ্রামের বেকার শিক্ষিত তিন যুবক ও একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে অস্থায়ী পার্শ্ব-শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করেছেন প্রধান শিক্ষক। তাদের কিছু সাম্মানিক অর্থ, প্রধান শিক্ষক নিজের বেতন থেকেই দেন। প্রধান শিক্ষকের আহবানে তারাও এগিয়ে এসেছেন।প্রধান শিক্ষকের এমন ভূমিকায় খুশি স্থানীয় গ্রামবাসীরা।
অভাব অভিযোগ নিয়ে গত ২০২২ সাল থেকে প্রশাসনিক মহলে আবেদন নিবেদন করতে শুরু করেছে এই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কোন সুফল মেলে নি। অথচ এই বিদ্যালয় থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পানিপারুল মুক্তেশ্বর হাইস্কুল। সেই হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হলেন তরুণ কুমার মাইতি। তিনি এগরা বিধানসভার তৃণমূল বিধায়কও বটে। এই বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোর উন্নয়নে বিধায়ক ও প্রশাসন যাতে ব্যবস্থা নেন, তার জন্য আবেদন জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তাপস দে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের অসুবিধার কথা ভেবে , ৭ লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত লোন করেছেন। সেই টাকায় দোতলায় একটি ক্লাস রুম তৈরি করছেন। সেই লোনের টাকা প্রতি মাসে নিজের বেতন থেকেই পরিশোধ করছেন প্রধান শিক্ষক। এখন শ্রেণিকক্ষ বেড়ে তিনটি হয়েছে। তাতেও সমস্যা মেটেনি। বারান্দায় চাটাই পাতিয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)