সুপ্রিম কোর্টে খারিজ গুরুংদের 'নিরাপত্তা'র আবেদন, ভোটভাগ্য এবার হাইকোর্টের হাতে
রোশন গিরি জি ২৪ ঘণ্টাকে জানিয়েছেন, "আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছি। নির্দেশ হাতে পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেব।"
নিজস্ব প্রতিবেদন : গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুং ও রোশন গুরুংয়ের 'নিরাপত্তা'র আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত মামলাটি খারিজ করে দিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে পাঠিয়েছে। বিচারপতি অরুণ মিশ্র এবং বিচারপতি নবীন সিংহর বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী ৪ দিনের মধ্যে বিমল গুরুং ও রোশন গিরি কলকাতা হাইকোর্টে তাঁদের দাবির প্রেক্ষিতে আবেদন করতে পারবেন। বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রসঙ্গত, সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে অংশগ্রহণে অনুমতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল বিমল গুরুং ও রোশন গিরি। ভোটে অংশগ্রহণ করতে শীর্ষ আদালতের কাছে ৩ সপ্তাহের জন্য অন্তবর্তী নিরাপত্তার দাবি মঞ্জুরের আর্জি জানিয়েছিলেন গুরুং-রোশন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই এদিন মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে ওঠে।
কিন্তু, বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি নবীন সিংহর বেঞ্চ গুরুংদের আবেদন খারিজ করে দিয়ে মামলাটি ফিরিয়ে দেন কলকাতা হাইকোর্টে। সুপ্রিম কোর্টের তরফে যথাযথ শুনানি করে মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, হাইকোর্টে মামলাটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিমল গুরুং বা রোশন গিরিদের বিরুদ্ধে কোনওরকম ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে রোশন গিরির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, মোর্চা নেতা জি ২৪ ঘণ্টাকে জানিয়েছেন, "আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছি। নির্দেশ হাতে পাওয়ার পরই সিদ্ধান্ত নেব।"
Supreme Court disposes off petition of two Gorkha Janmukti Morcha (GJM) leaders Roshan Giri and Bimal Gurung seeking a direction to grant them interim protection for three weeks to allow them to participate in the general elections. pic.twitter.com/yEgMkGnNCG
— ANI (@ANI) April 3, 2019
উল্লেখ্য, সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ৭ দফায় ভোট। দ্বিতীয় দফায় ১৮ দার্জিলিংয়ে ভোট। লোকসভা ভোটে অমর সিং রাইকে দার্জিলিং আসন থেকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিনয় তামাং, অনীক থাপা জানিয়ে দিয়েছেন লোকসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেকেই সমর্থন করবে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে পাহাড়ের রাজনীতিতে কামব্যাক করার মরিয়া চেষ্টায় বিমল গুরুং ও রোশন গিরিরা। প্রসঙ্গত, ২০১৭-র জুনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দার্জিলিং। বিমল গুরুং ও রোশন গিরিদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় দায়ের হয় অভিযোগ। তখন থেকেই আর বিমল গুরুং বা রোশন গিরি, কাউকে-ই আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। এরপর পাহাড়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনেক জল গড়ায়। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতৃত্বের রাশ উঠে আসে বিনয় তামাং ও অনীক থাপার হাতে।
আরও পড়ুন, বাংলায় পা দেওয়ার আগেই বাংলায় টুইট মোদীর, সম্বোধনে অনুসরণ স্বামী বিবেকানন্দকে
এরপর ২০১৭-র অক্টোবরে এসআই অমিতাভ মালিক হত্যায় সরাসরি বিমল গুরুং ও রোশন গিরিদের বিরিুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনা হয়। তাদের খোঁজ একাধিক জায়গায় হানা দেয় পুলিস। সেইসময় গুরুং ঘনিষ্ঠ বেশকিছু নেতা পুলিসের জালে ধরা পড়েন। বেশ কিছুজন চলে আসে বিনয় তামাং শিবিরে। সেইসময় থেকেই অজ্ঞাতবাসে চলে যান বিমল গুরুং ও রোশন গিরি। তাঁদের সঙ্গেই অজ্ঞাতবাসে চলে যান গুরুং ঘনিষ্ঠ বেশকিছু নেতানেত্রীও। এদিকে, এখন গুরুংপন্থী কাউকে সামনে রেখেই এবারও পাহাড়ে আসন দখলে রাখতে চাইছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু বিমল গুরুং ও রোশন গিরিদের বিরুদ্ধে যেরকম কঠোর ধারা রয়েছে, তাতে প্রকাশ্যে এলে তাঁদের ষোলোআনা গ্রেফতারির সম্ভাবনা রয়েছে।