বাড়ি আসার কথা ছিল, কিন্তু লকডাউনে ফিরতে পারেননি, বীরভূমের বীর জওয়ান রাজেশ ফিরছেন কফিনবন্দি হয়েই...
বাবা অসুস্থ, তাই তাঁকে দেখতেই আসা। এরপর আরও একবার আসার কথা ছিল তাঁর, কিন্তু লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় আর আসতে পারেননি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: দেশের জন্য কাজ করার ইচ্ছা ছিল স্কুলে পড়ার সময় থেকেই। সেইভাবে নিজের মনকেও প্রস্তুত করেছিলেন। কলেজে পড়ার সময় দ্বিতীয় বর্ষেই সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। স্বপ্ন ছোঁয়ার জন্য এক ধাপ এগোন তিনি। বাড়িতে ছোটো বোনের বিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে কারণ বাবা অসুস্থ। অল্প বয়সেই সংসারের সব দায়িত্ব নিজের হাতে নিয়েছিলেন, সঙ্গে অবশ্যই দেশরক্ষার দায়িত্বও। হাসিমুখে সেই দায়িত্ব পালন করতে করতেই অন্তহীন পথে হাঁটালেন লাদাখে ভারত চিন সংঘর্ষে শহিদ জওয়ান বীরভূমের রাজেশ ওড়াং।
বীরভূমের মহম্মদবাজারের বেলগড়িয়ার গ্রামের যুবক রাজেশ ওড়াংয়ের বাড়িতে এখন প্রতিবেশী আত্মীয়দের ঢল। টিভির পর্দাতেই ছেলের না থাকার খবরটা শুনেছে পরিবার। তারপর থেকে ওঁদের কাছে গোটা পৃথিবীটাই যেন অন্ধকারে ডুবে গিয়েছে। ছেলে হারানোর যন্ত্রণা তো রয়েছে, তবে চোখের কোণ ভেজা থাকলেও বুক গর্বে ভরে উঠেছে রাজেশে ওড়াঙের বাবা-বোনের।
ছেলে যে বীরের মৃত্যু বরণ করে নিয়েছেন, সব হারিয়ে তাতেই শান্তি খুঁজছেন তাঁরা।
২০১৫ সালেই কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন সেনাবাহিনীতে যোগ দেন রাজেশ। ৮ মাস আগেই ছুটিতে বাড়ি ঘুরে গিয়েছিলেন।
বাবা অসুস্থ, তাই তাঁকে দেখতেই আসা। এরপর আরও একবার আসার কথা ছিল তাঁর, কিন্তু লকডাউন শুরু হয়ে যাওয়ায় আর আসতে পারেননি।
আরও পড়ুন: 'এনাফ ইজ এনাফ! প্রধানমন্ত্রী চুপ কেন? কেন লুকোচ্ছেন তিনি?' বিস্ফোরক টুইট রাহুল গান্ধীর
লকডাউন উঠলেই ফের আসার কথা ছিল রাজেশের। কিন্তু রাজেশ আসছেন বাড়ি, তবে কফিনবন্দি হয়ে। মেনে নিতে পারছেন না পরিবারের সদস্যরা।
বাড়ির একমাত্র রোজগেরে রাজেশ তাঁর স্বপ্নের জগতেই চলে গেলেন, শুধু ফেলে গেলেন বীরের তকমা।
আর চোয়াল শক্ত করে রাজেশের বাবা শুধু বললেন একটাই কথা, "চিনকে যোগ্য জবাব দিক ভারত।"